ঢাকা, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪ | কার্তিক ৩ ১৪৩১
ঢাকা, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪       
Shruhid Tea

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ১ অক্টোবর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে তা সরকারই বলবে। উপদেষ্টা পরিষদে আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি, কিন্তু এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের মুখ থেকে যখন শুনবেন, তখন সেটাই হবে তারিখ হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশের ভূমিকা নেয়ার কথা থাকলেও সার্বিক পরিস্থিতিতে তারা মনোবল হারিয়ে ফেলেছে। সম্প্রতি ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় সাধারণ মানুষ থেকে কিছুটা দূরে থাকতে চাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের সবাই তো অন্যায় করেনি। যারা অন্যায় করেছে তাদের শাস্তি হবে। বাকিরা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এটি একটি লম্বা প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সীমিত সময়ের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, সশস্ত্র বাহিনীকে যে সময়ের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যেই পুলিশ ঘুরে দাঁড়াবে।

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব এবং সরকার পরিচালনায় তরুণদের ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, তরুণদের হাতেই ক্ষমতা যাওয়া উচিত। তাদের (তরুণদের) নেতৃত্বে একটি বড় কাণ্ড হয়ে গেল। কাজেই তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আমি বরাবরই বলে আসছি, তরুণদেরই দেশ চালানো উচিত। তারাই তাদের ভবিষ্যৎ রচনা করবে।

পাহাড়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সব জায়গায় শান্তি চাই। কোনো কোনো জায়গায় হয়তো অপারগ হয়েছি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমরা ইচ্ছা করে এটা করছি না। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছিল, সেটা ঠিকও হয়ে গেছে। এমন ঘটনা ঘটলে সরকারের দায়িত্ব তা সমাধান করা।

গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা ও পুলিশ নিহত ও আহতের ঘটনায় সরকারের ব্যবস্থা সম্পর্কে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, যে অপরাধ করেছে, সে শাস্তি পাবে। অপরাধ করলেই শাস্তি পেতে হবে।

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, তাদের শরণার্থী মর্যাদা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দিয়েছে এবং ইউএনএইচসিআর সেখানে কাজ করছে। জাতিসংঘের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বৈঠকগুলোতে আলোচনা হয়েছে।

বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য সংস্কারের পর নির্বাচন দেওয়া এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা বলেও জানান তিনি।

স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা এখন দেশের রাজনীতিতে সামনের দিকে চলে আসছে- এ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের সংবিধান বলে, প্রত্যেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। সেই অধিকার আমার নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধানের বিধান থেকে আমি বের হয়ে আসতে পারি না। তারা যদি অপরাধ করে তাহলে শাস্তি পাবে। কিন্তু তাদের অধিকার কেড়ে নিতে পারি না।

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সারাদেশ একমত। কী বিষয়ে বা কীভাবে হবে, সেটা নিয়ে বিতর্ক হবে। এজন্য আমরা কমিশন গঠন করেছি। কমিশন একটা রূপরেখা দেবে, সেটা নিয়ে সারাদেশে বিতর্ক করার সুযোগ তৈরি করা হবে। সবাই মিলে ঠিক করবে যে, এই সংশোধন এখনই করবে নাকি পরবর্তীতে। সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া আইনি ব্যাপার। আইনিভাবেই সব ঠিক করা হবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা আইনি বিষয়। তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, আইনি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আমরা নিশ্চয়ই তাকে ফেরত চাইবো।

বঙ্গবাণীডটকম/এমএস

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত