ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১
ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪       
Shruhid Tea

আমন ধানের পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে ক্ষয়ক্ষতি ও তা দমন ব্যবস্থা

মো: ফরিদুল ইসলাম বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১৮ আগস্ট ২০২১

আমন ধানের পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে ক্ষয়ক্ষতি ও তা দমন ব্যবস্থা

ছবি-সংগৃহীত

আমন ধানের পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে ব্যাপক হারে ক্ষতি হয়। এই পোকা পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পাতায় সাদা লম্বা দাগ দেখা যায়। কীড়া এক পাতা হতে অন্য পাতায় যায়। একটি কীড়া ১-৩ টি পাতা আক্রমণ করতে পারে। খুব বেশি ক্ষতি করলে পাতাগুলো পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়। থোড় অবস্থায় আক্রমণে চিটা হয় এবং ফলন কমে যায়।

এই পোকার নাম: পাতা মোড়ানো পোকা/ Leaf Roller, বৈজ্ঞানিক নাম: Sylepta derogata, পরিবার: Pyraustidae

লার্ভা পোকাটি  ৩০-৩৫ মিলি লম্বা, হালকা সবুজ রঙের হয়, ও মাথায় কালো রঙের দাগ থাকে। পিউপা টি ঘন বাদামি রঙের হয়ে থাকে। বড়ো পোকাটি হালকা হলুদ থেকে হালকা বাদামী রঙের হয়, এবং মাথায় কালো বাদামি রঙের ছোট দাগ লক্ষ করা যায়। দুটি ডানার ওপরে আড়াআড়ি ভাবে কালো রেখা দেখা যায়।

একটি স্ত্রী পূর্ণাঙ্গ পোকা ২০০-৩০০ টি ডিম দিতে সক্ষম, ডিম গুলো পাতার নীচের দিকে দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ৩-৬ দিন সময় লাগে। লার্ভা কালো ১৫-২৫ দিনের মধ্যে সমাপ্ত হয়। পিউপা গুলো পাতার ওপর কিংবা কোঁকড়ানো পাতার ভিতরে অবস্থান করে। পিউপার জীবন চক্র ৬-১২ দিনের মধ্যে সমাপ্ত হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক পোকা গুলো আবার এক সপ্তাহ বেঁচে থাকতে পারে। জীবন চক্রটি ২৫-৫৫ দিনের মধ্যে সমাপ্ত ঘটে।

অনুকূল পরিবেশ:
#আর্দ্রতা  ৮০%
#তাপমাত্রা ২৫-২৯ ডিগ্রি সে.
#বৃষ্টির পর ২-৩ দিন প্রখর রোদ হলে
#জমিতে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন ব্যবহার করলে
#বর্ষা মৌসুমে
#আমন ও আউশ ধানে

পাতা মোড়ানো পোকা দমন করতে হলে আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে। পরজীবী পোকার বংশ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি করে এমন কীড়া ধ্বংস করতে হবে। মথ ধরার জন্য (সকালে বা বিকালে) হাতজাল ব্যবহার করা এবং সন্ধ্যার পর আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। জমিতে ডালপালা পুঁতে পোকাখেকো পাখির সাহায্যে পূর্ণ বয়স্ক মথ দমন করা যায়। জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার করা যাবে না। ধানের চারা লাইন ও লোগো পদ্ধতিতে লাগাতে হবে।

তবে শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক যেমনঃ সেভিন ৮৫ এসপি, এসিকার্ব, সিনারিল, ভিটাব্রিল ১.৭ কেজি/হেক্টর 
অথবা কারটাপ+অ্যসিটাপ্রির্মিড গ্রুপের কীটনাশক (কার্ট্রাপ্রিড, বাতির, এসিপ্রিড প্লাস প্রতি লিটার পানিতে ১ এমএল করে) 

অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ডারসবান ২০ ইসি বা পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি ২মিলি./ লি. 

অথবা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ২ মিলি/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। 
এছাড়া বেল্ট এক্সপার্ট, মারশাল, এসাটাফ, ফরচুনেট, হেসিফেট, মাইনেকট্রো এক্সট্রা, অটোমিডা, ফিলবার্ট, রিলোর্ড, লুমেকটিন, সানটাপ প্লাস অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে পারেন।

পরামর্শে- উপসহকারী কৃষি অফিসার
ব্লক: ভোটমারী কালিগঞ্জ, লালমনিরহাট।

বঙ্গবাণীডটকম/এমএস

কৃষি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত