ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১
ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪       
Shruhid Tea

প্রকৃতি ভিত্তিক উন্নয়ন দর্শনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ৪ এপ্রিল ২০২২

প্রকৃতি ভিত্তিক উন্নয়ন দর্শনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব পানি দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সরকার দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উন্নয়ন দর্শনের ক্ষেত্রে আমরা প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছি। পানি সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্যে আমাদেরকে প্রকৃতি ভিত্তিক কৌশল খুঁজে বের করতে হবে।

সোমবার বিশ্ব পানি দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বৃষ্টি ও বন্যার পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি জলাধার নির্মাণ এই দু’টি বিষয় মনে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত নগরীর গ্রিন রোডের পানি ভবনের মূল ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদেরকে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং ভূগর্ভে জলাধার নির্মাণের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবাইকে খাল, বিল, হাওর ও বাওড়ের সঙ্গে নদীর সংযোগবিন্দু সমূহ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন তা না হলে নদীর নাব্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি এ সকল বিষয় বিবেচনায় নিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বরোপ করেন।

শেখ হাসিনা নদী খননের সময় নাব্যতা সৃষ্টির পাশাপাশি অতিরিক্ত পানি কিংবা বন্যার পানি সংরক্ষণে বাফার জোন তৈরির ওপরও গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই পানি শীতকালে চাষাবাসে ব্যবহার করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, বন্যার সঙ্গে কিভাবে বাঁচতে হয়, সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয় সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ।

প্রধানমন্ত্রী সড়ক কিংবা বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নেয়ার সময়ে গাছের চারা লাগানোরও নির্দেশ দেন। কারণ এ পদক্ষেপ ভূমিধস থেকে রক্ষায় সহায়ক হবে।

তিনি সবাইকে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোরও নির্দেশ দেন। কারণ ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। আর বাংলাদেশকে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

আরো পড়ুন> মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সম্পত্তির পরিমাণ ৩৯২ কোটি টাকা: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে নদীর পানি বিশুদ্ধ করে জনগণের কাছে নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং সেচকাজে ভূপৃষ্ঠের পানি ব্যবহারসহ নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। তবে তিনি গৃহস্থালী, নির্মাণ কিংবা সেচসহ সকল কাজে পানি ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধনের অনুরোধ জানান। কারণ, সরকারকে পানি বিশুদ্ধ করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশ কোনো ভূমিকা না রাখলেও বাংলাদেশের মতো কিছু ছোট দ্বীপ ও দেশকে এর ব্যাপক খেসারত দিতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুতরাং দেশ রক্ষায় আমাদের নিজেদেরই পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সরকার ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ গ্রহণ করেছে যেখানে এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নিরাপদ ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এর বাস্তবায়নও শুরু করেছেন।  

অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বক্তব্য রাখেন এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবীর বিন আনোয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিশ্ব পানি দিবসের ওপর একটি অডিও-ভিডিও গান এবং বাংলাদেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক একটি ডকুমেন্টরি প্রদর্শিত হয়।

এবারের বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘গ্রাউন্ডওয়াটার-মেকিং দি ইনভিজিবল ভিজিবল।’

বিশুদ্ধ পানির গুরুত্বের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত এবং বিশুদ্ধ পানি সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার সুপারিশের লক্ষ্যে প্রতি বছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয়।

জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) সুপারিশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী ২২ মার্চ ওয়ার্ল্ড ডে ফর ওয়াটার ঘোষণা করা হয়, যা পালিত হয়ে আসছে  ১৯৯৩ সাল থেকে।

বঙ্গবাণীডটকম/এমএস

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত