ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১
ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪       
Shruhid Tea

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ১ অক্টোবর ২০২০

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘আর্জেন্ট অ্যাকশন অন বায়োডাইভার্সিটি ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক ইভেন্টে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন- পিআইডি

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনিয়োগের সময় ‘টেকসই ভবিষ্যৎ’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় চার দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ভার্চুয়াল জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে দেয়া বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার প্রস্তাব পেশ করেন।

প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবী এবং আমাদেরকে রক্ষার জন্য বিনিয়োগের সময় আমাদের টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।

‘টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ’ শীর্ষক এ ইভেন্টে প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা ও গবেষণার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বৃহত্তর গণসচেতনতা সৃষ্টি ও জাতীয় পর্যায়ে আইন-কানুন জোরদার করা এবং নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া জীববৈচিত্র্য রক্ষার মূল পদক্ষেপ।

জেনেটিক রিসোর্স এবং ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের প্রকৃত মালিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী সুফল বাটোয়ারায় প্রবেশাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, তিনি তার তৃতীয় প্রস্তাবে উল্লেখ করেন।

চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিসের (সনদ) লক্ষ্য অর্জন আমাদের বিলুপ্তি এবং টিকে থাকার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে। আমাদের অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ’ এর ব্যাপারে ‘সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করি যেখানে পৃথিবী গ্রহের প্রতিটি প্রজাতি আমাদের বাস্তুসংস্থানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

যদিও তিনি বলেন, ডব্লিউডব্লিউএফ এবং লন্ডন জিওলজিক্যাল সোসাইটির তথ্যমতে, ১৯৭০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বন্যপ্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৮ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশ মিঠা পানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিঠা পানির জীববৈচিত্র্য বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, বৈশ্বিক জলাভূমির ৮৫ শতাংশ এরইমধ্যে শিল্প বিপ্লবের পরে হারিয়ে গেছে। ১৯৭০ সাল থেকে মিঠা পানির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর, সরীসৃপ ও মাছের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ৪ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলছি এবং ফলস্বরূপ, কোভিড-১৯ এর মতো ‘জুনটিক’ (প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত) রোগের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের বর্তমান ক্রিয়াকলাপ অব্যাহত রাখা হলে আমরা কেবল অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তির কারণই হচ্ছি না, মূলত আমরা মানবজাতিরও চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে সংবিধানে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের আদেশ কার্যকর করেন।

জৈব বৈচিত্র্য সম্পর্কিত কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য আইন-প্রণয়নকারী অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের সংসদ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বায়োলজিকাল ডাইভার্সিটি অ্যাক্ট ২০১৭ পাস করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের মোট স্থলভাগের ৫ শতাংশেরও বেশি এবং সামুদ্রিক জলভাগের প্রায় ৫ শতাংশ অঞ্চলকে ‘সংরক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে।

বঙ্গবাণী/এমএস

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত