ঢাকা, ০৪ মে, ২০২৫ | বৈশাখ ২১ ১৪৩২
ঢাকা, ০৪ মে, ২০২৫       
Shruhid Tea

বেড়েছে পাট উৎপাদনে খরচ, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

নুরুল ইসলাম, সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ১৬:১৯, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

বেড়েছে পাট উৎপাদনে খরচ, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

পাটের ক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছেন চাষিরা। ছবি- বঙ্গবাণী

বছর যাচ্ছে আর সোনালী আঁশ পাটের আবাদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। তবে বাজারে বাড়ছে না পাটের কাঙ্খিত হারে দর। পাট চাষাবাদে খরচের সাথে বিক্রয় মূল্যে ব্যবধান বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় চাষিরা। গত বছর প্রকার ভেদে প্রতিমণ পাট ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন ব্যয় আর বিক্রয় মূল্য ছিল সমান সমান। যে কারণে পাট চাষিদের চোখে-মুখে ছিল না হাঁসি।

পাট উৎপাদনে দেশের র্শীষ অবস্থানে ফরিদপুর। আর ফরিদপুরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট আবাদ হয় সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায়। এবারও উভয় উপজেলায় অন্তত ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ করা হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদে সর্বক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। চাষিদের দাবি, এবার পাটের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। তাই পাট উৎপাদন খরচের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে কৃষিবিভাগের সহযোগিতা চান স্থানীয় পাটচাষিরা।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে নেয়ার পর বর্তমানে পাট আবাদ নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে বীজতলা থেকে পাটের চারা বের হতে শুরু করেছে। আর যারা আগাম বীজ বপণ করেছিলেন, তাদের ক্ষেতের পাটের চারা দুই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা হয়েছে। বর্তমানে পাটচাষিরা কেউ পাটের ক্ষেতে সেচ দিয়ে ভিজাচ্ছে, কেউ বা ক্ষেত থেকে আগাছা পরিস্কারের কাজ করছেন।

তবে শুকনো মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পানির দুষ্প্রাপ্যতাসহ পাট চাষের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় সকল ধরনের উপকরণ ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় সকলের চোখে-মুখেই হতাশার ছাপ দেখা গেছে।

সালথার পাটচাষি সহিদ মিয়া জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভ‚গর্ভস্থরের পানির স্তর নিচে নামছে। সংকট এমন পর্যায়ে যে অনেক মেশিনেই পানি উঠছে না। তাই জমিতে সেচ দিতে খরচ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। সেই সাথে সার-ওষুধের দাম তো বাড়ছেই। যে কারণে ব্যয়ের সাথে আয় মেলাতে না পেরে হাপিয়ে উঠছে কৃষকরা।

নগরকান্দার শাকপালদিয়া গ্রামের পাটচাষি জাহিদুল বলেন, উৎপাদন খরচ বাড়লেও উৎপাদিতপণ্যের মূল্য আনুপাতিক হারে বাড়ে না। আর এতে কৃষকরা বরাবরই আর্থিক ক্ষতিতে থাকেন। পাট আবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট উপকরণ ও অন্যান্য ব্যয় হ্রাস করণের পাশাপাশি উৎপাদন পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের ভূমিকা থাকা জরুরী।

নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোস বলেন, বীজ বপণের সময় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকদের নিজ খরচে সেচ প্রদান করতে হয়েছে বিধায় উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে পাট জাগে সমস্যা হবে না। পাটের দাম ভাল সন্তোষজনক পেলে কৃষকরা লাভবান হবে বলে আমরা আশাবাদী।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনে বৈরী আবহাওয়া অনেক ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি করে। তবে ভালভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতে পারলে ব্যয়ের হার কিছুটা কমবে।#

কৃষি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত